স্কুল জীবনের সেই সোনালি অতীতে বাংলা সাহিত্যের প্রতি প্রবল আগ্রহ উচ্ছ্বাস উদ্দীপনা থেকেই শুরু হয় সাহিত্য চর্চা। বিশেষ করে কবিতা, উপন্যাসের প্রতি মনোযোগী হয়ে ওঠি। নিয়মিত হই লেখালেখিতে। একসময় লেখালেখির পাশাপাশি সাহিত্যের কল্যাণে কাজ করার এক প্রবল ইচ্ছা মনের মধ্যে সব সময় তাড়া করতো। প্রায় দুই যুগ আগে সিলেটের সাহিত্য অঙ্গনের আলোকিত কবি সাহিত্যিকদের সান্নিধ্য লাভের সৌভাগ্য হয়। সাহিত্য সংগঠনের সংশ্লিষ্টতায় সাহিত্যকার্যক্রমে নিজেকে তখন সমর্পণ করি। দীর্ঘদিন পরে হলেও সাহিত্যের উর্বরভূমি এই সিলেটে সাহিত্যের মিলনমেলা তৈরি করতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। সাহিত্য যেমন মানুষের মনের খোরাক জোগায় , সাহিত্য মানুষকে আলোর পথও দেখায়।আমাদের রয়েছে সাহিত্যের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। সেই ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে হলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন শুদ্ধ ও মননশীল সাহিত্যচর্চা। আমাদের অগ্রজ কবি সাহিত্যিকগণ এক্ষেত্রে হতে পারেন আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস। তাদের শুদ্ধ ও মননশীল সাহিত্যকর্ম আজও বেঁচে আছে অমর সৃষ্টি হয়ে। শুদ্ধ ও মননশীল সাহিত্যচর্চায় সাহিত্যপ্রেমীদের উদ্বুদ্ধ করতেই আমি বাংলা সাহিত্য পরিষদ ইউকে নামে একটি সাহিত্য সংগঠন প্রতিষ্ঠা করি।সংগঠন প্রতিষ্ঠার পর বাংলাদেশ – ভারতের বাংলাভাষী প্রতিভাবান নবীন প্রবীণ কবিদের নিয়ে একটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের উদ্যোগ করি। হৃদয়ে বাংলাদেশ নামে প্রকাশিত এই গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন হয় জমকালো এক আয়োজনের মধ্য দিয়ে। বিগত ৭ অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ তারিখে সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন আয়োজন করি। আমন্ত্রিত হন পশ্চিমবঙ্গ ভারত থেকে কবি ও শিক্ষাবিদ সিরাজ উদ্দিন ও মনিপুর রাজ্য ভারত থেকে কবি কমর উদ্দিন লস্কর। বাংলাদেশ থেকে কবি ও গবেষক মাহমুদুল হাসান নিজামী ও শিক্ষাবিদ প্রফেসর আব্দুল বাকি চৌধুরী অনুষ্ঠানে শুভাগমন করেন। আরও কয়েকজন স্বনামধন্য কবি সাহিত্যিকের পদভারে সেদিন মুখরিত হয় সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তন। অসংখ্য কবি সাহিত্যিকের সরব উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। প্রত্যেক কবি সাহিত্যিকবৃন্দ ও সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ে বিশেষ অবদান রাখা ব্যক্তিবর্গকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। আজ বাংলা সাহিত্য পরিষদ ইউকে এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কৃতি শিক্ষার্থী ,গুণীজন সংবর্ধনা ও আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন আয়োজন একজন সাহিত্য সংগঠক হিসেবে আমার জন্য অত্যন্ত গৌরবের এক নতুন অধ্যায়। ভবিষ্যতেও আমার এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।সুদূর প্রবাসে অবস্থা করলেও বাংলা সাহিত্যের জন্য আমার প্রাণ নিবেদিত থাকবে। ইতোমধ্যে “সুরমা পাড়ের কথা” নামে একটি ত্রৈমাসিক পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।এই প্রয়াসও চলমান থাকবে। সর্বোপরি আমি অশেষ ধন্যবাদ জানাই সংগঠনের পরিচালনা পর্ষদ-কে যারা অত্যন্ত পরিশ্রম করে আজকের এই কৃতি শিক্ষার্থী , গুণীজন সংবর্ধনা ও আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনটি সুন্দর ও সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। বাংলা সাহিত্য পরিষদ আগামী দিনে আরও সুন্দর ও মননশীল অনুষ্ঠান, কার্যক্রম চালিয়ে যেতে সচেষ্ট থাকবে, এতে আপনাদের সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।
লেখক:
যুক্তরাজ্য প্রবাসী কবি ও সংগঠক
প্রতিষ্ঠাতাঃ বাংলা সাহিত্য পরিষদ ইউকে।