পুলিশ বেস্টুনিতে থেকে যারা বলে খেলা হবে তাদের বেলা শেষ-
সরকার দলীয় সন্ত্রাস ও নারায়ণগঞ্জে পুলিশের গুলিতে যুবদল কর্মী শাওন হত্যার প্রতিবাদে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। গতকাল শনিবার দুপুরে শায়েস্তানগরস্থ বিএনপির কার্যালয়ে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও টানা ৩ বারের নির্বাচিত হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগকারী মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছ বলেন- নারায়নগঞ্জে যুবদল কর্মী শাওন দেশের মানুষের দাবী আদায়ের জন্য জীবনের ঝুকি নিয়ে রাজপথে গিয়েছিল। পুলিশ তাকে গুলি করে হত্যা করেছে।
আমরাও জীবনেরঝুকি নিয়ে একই দাবীতে রাজপথে যাই। শাওনের পরিণতি আমাদেরও ভাগ্যেও ঘটতে পারে। ভোলায় একইভাবে ছাত্রদল নেতা নুরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আব্দুর রহিমকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। তাদের দুই পরিবারের পক্ষ থেকে সরাসরি পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলা একদিন ঘুরবে, হত্যাকারীদের বিচার এ দেশের মাটিতে হবে। সেই ভয়ে নারায়নগঞ্জের পুলিশ ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছে। নিহত শাওনের লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেনি। নিশিরাতে জানাজা পড়ে পুলিশ প্রহরায় দাফন করা হয়েছে। যাতে শাওনের পরিবার ভোলা জেলার মত পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা না করতে পারে। কিন্তু এই দিন দিন নয়, সময় পরিবর্তনের সাথে সাথেই এসব ঘটনার বিচার হবে। জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন- আমাদের কথা কম বলতে হবে, আর কাজ বেশি করতে হবে। উৎসাহ ভাল, অতিউৎসাহ ভাল না। আমরা সব সময় বলি, ইচ্ছা করলেই পুলিশের ব্যারিকেট ভাঙ্গতে পারি। যার প্রমাণ গত ১ সেপ্টেম্বর দিয়েছি। দায়িত্ব নিয়ে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। পুলিশের ব্যারিকেট আমাদের ভাঙ্গতে হবে না। পরিস্থিতি বাধ্য করবে ব্যারিকেট সড়ে যেতে। পুলিশ আমাদের প্রতিপক্ষ না, পুলিশকে প্রতিপক্ষ বানানো যাবে না। দুষ্ট গরুর চেয়ে শূণ্য ঘোয়াল ভালো। যারা দলের শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে চায়, আমরা তাদের চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ করবো।
আমাদের মনে রাখতে হবে, এবারের খেলা ফাইনাল খেলা। এই খেলায় আমাদের জিততেই হবে। এই খেলা মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার খেলা, এই খেলা দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের খেলা। যারা পুলিশ বেস্টুনিতে থেকে বলে খেলা হবে তাদের বেলা শেষ। তাদের ভরসাই হচ্ছে পুলিশ। পুলিশ ছাড়া তারা অচল।
জি কে গউছ বলেন- ভাংচুর ও আগুন সন্ত্রাসের রাজনীতি বিএনপি করে না। অতিতে কর্মসূচী দিয়েছে বিএনপি, আর গাড়ি ভাংচুর করে আগুন দিয়েছে যুবলীগ ছাত্রলীগ। এসব ম্যাকানিজম করেছেন ওবায়দুল কাদের। সেই সুযোগ আর বিএনপি দিবে না। অত্যন্ত সতর্কতার সাথে বিএনপি রাজনৈতিক কর্মসূচী দিচ্ছে। ঢাকায় লাখো মানুষের সমাবেশ হচ্ছে কিন্তু কোনো গাড়িতে একটি ঢিল পর্যন্ত ছুড়া হয়নি। হবিগঞ্জে হাজার হাজার মানুষের সমাবেশ হচ্ছে, শোডাউন হচ্ছে, আরও হবে, কিন্তু বিশৃংখলতা সৃষ্টির সুযোগ আমরা কাউকে দিবো না।
তিনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের সু-স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
আলহাজ্ব জি কে গউছের সভাপতিত্বে ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মিজানুর রহমান চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি এডভোকেট মঞ্জুর উদ্দিন শাহীন, যুগ্ম আহবায়ক হাজী এনামুল হক, সদস্য মহিবুল ইসলাম শাহীন, গীরেন্ড চন্দ্র রায়, বানিয়াচং উপজেলা বিএনপির সভাপতি মুজিবুল হোসেন মারুফ, সাবেক আহবায়ক হাজী লুৎফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক নকীব ফজলে রকিব মাখন, মাহফুজুর রহমান চৌধুরী, এডভোকেট জাদিল হোসেন প্রমুখ।