আলী জাবেদ মান্না, নবীগঞ্জ প্রতিনিধি :নবীগঞ্জে দুই গ্রুপের মধ্যে তিন ঘণ্টাব্যাপী ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পুলিশসহ উভয় পক্ষের শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে মার্কেটসহ বিভিন্ন দোকানপাট। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ।(২৮ ফেব্রুয়ারী) বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত নবীগঞ্জ শহরের নতুন বাজার এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের ১৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ ঘটনায় নবীগঞ্জ শহরে থমথমে পরিস্থিতি বরাজ করছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। আটককৃতরা হলেন, ইনাতাবাদ গ্রামের নাসির মিয়া (২৫), একই গ্রামের আবু জাহেদ (৩৪), ফজল মিয়া (৩৮), ছুনু মিয়া (৩৪), জুবেদ মিয়া (২৪), বিল্লাল মিয়া (২৩), রাজু মিয়া (২৪), দিলদার (২৬), খালেদ মিয়া (২৮), সোলেমান (৩৫), মইন উদ্দিন (২১), মো. মাফিন উদ্দিন (২০) ও আনমুনু গ্রামের তৌহিদ মিয়া (৩৫) ও অন্তর মিয়া (২৬)।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার কুর্শি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও এনাতাবাদ গ্রামের খালেদুর রহমান খালেদের লোকজন এবং পৌর কাউন্সিলর আনমনু গ্রামের নানু মিয়ার লোকজনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার ও কলেজছাত্র তাহসিন হত্যার ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখা নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এ ঘটনার জের ধরে সন্ধ্যায় আনমনু গ্রামের লোকজন কুর্শি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খালেদুর রহমানের মালিকানাধীন মার্কেট রাজা কমপ্লেক্স ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান খালেদের অনুসারী ও এনাতাবাদ গ্রামের লোকজন রাজা কমপ্লেক্সে জড়ো হন। পরে এনাতাবাদ ও আনমনু গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে উভয় পক্ষ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, এ সময় ভাঙচুর করা হয় রাজা কমপ্লেক্সসহ কয়েকটি মার্কেট ও ২০টি দোকানপাট। অগ্নিসংযোগ করা হয় একটি মোটরসাইকেলে।নবীগঞ্জ থানার পুলিশ দফায় দফায় টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে। টানা তিন ঘণ্টা চলে সংঘর্ষ। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম দাস অনুপ, সার্কেল এএসপি আবুল খায়ের, সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন দেলোয়ারসহ বিভিন্ন জনপ্রতিনিধির হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় পুলিশসহ উভয় পক্ষের শতাধিক মানুষ আহত হন। আহতদের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কুর্শি ইউপি চেয়ারম্যান খালেদুর রহমান খালেদ বলেন, ‘কলেজছাত্র তাহসিনকে হত্যার আগে প্রথমে আমার মার্কেটে মারধর করা হয়। পুলিশকে সিসিটিভি ফুটেজ দিতে চাইলে আনমনুর লোকজন আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়। পরে আনমনু গ্রামের কিছু লোক ক্যামেরা ফুটেজের হার্ডড্রাইভ ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। এ সময় স্থানীয় লোকজন এ ঘটনা প্রতিহত করে। পরে আমার মালিকানাধীন মার্কেট রাজা কমপ্লেক্স তারা ভাঙচুর করে।আনমনু গ্রামের পৌর কাউন্সিলর নানু মিয়া বলেন, চেয়ারম্যান জানাজার নামাজে তাঁর গ্রামের লোকজনকে উদ্দেশ্য করে গালাগালি করলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।এ নিয়ে পরে সংঘর্ষ হয়। এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলী বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৪৫ রাউন্ড টিয়ারশেল ও ১৫ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়। এ ঘটনায় ওসি তদন্ত গোলাম মুর্শিদ, এসআই পরিমলসহ সাত পুলিশ সদস্য আহত হন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে। নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম দাশ অনুপ বলেন, ‘আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেছি।
<p>সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি:মোস্তাক আহমেদ, সম্পাদক:আতিকুল ইসলাম সোহাগ, নির্বাহী সম্পাদক: উমর ফারুক শাবুল, বার্তা সম্পাদক:মোঃ শরিফ উদ্দিন, সম্পাদক (+8801711-462641), নির্বাহী সম্পাদক (+8801727241310), বার্তা সম্পাদক(+8801750025347)<br><br></p>
© All rights reserved 2022 habiganjerkantho.com