হাজারো-কোটি শুকরিয়া জানাই মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আ'লামিনের,যিনি তাঁর অসীম দয়ায় আমাকে সৃষ্টি করে তাঁর এই সুন্দর পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন এবং রিযিক,আলো,বাতাস সহ বেঁচে থাকার জন্য হাজারো-কোটি নিয়ামত দান করে আমাকে এই পৃথিবীতে বাঁচিয়ে রেখেছেন।তারই সাথে সাথে গর্বভরে শুকরিয়া আদায় করছি,তিনি দয়া করে তাঁর প্রিয় হাবিব আখেরী নবী হযরত মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্ সঃ এর উম্মত হিসেবে প্রেরণ করেছেন। তারই সাথে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি প্রিয় মা-বাবার প্রতি যারা অত্যন্ত কষ্ট করে আমাকে পৃথিবীর মুখ দেখিয়েছেন এবং লালনপালন করে,শিক্ষা প্রদান করে মানুষ বানিয়েছেন।
জীবনের ডায়রী থেকে ঝরে গেলো ৪৭ টি বসন্ত। এই বয়সেও আল্লাহ্ রাব্বুল আ'লামিন সুস্থতা নামক নিয়ামত দিয়ে 'তাগড়া যুবক' হিসেবে রেখেছেন,আলহামদুলিল্লাহ্।এই ৪৭ বছর জিন্দেগীতে আল্লাহ্ পাক আমাকে অসংখ্য-অগণিত নিয়ামত দান করেছেন। আমি ভেবে পাচ্ছিনা,কোন নিয়ামতের কী শুকরিয়া আদায় করবো...!
চোখ ভরে চারিদিকে শুধু নিয়ামতরাজি দেখতে পাচ্ছি! এজন্যইতো আল্লাহর রাব্বুল আ'লামিন তাঁর পবিত্র ক্বোরআনের সূরা আররাহমানে চ্যালেঞ্জছুড়ে বলেছেন,"তোমরা আমার কোন কোন নিয়ামত অস্বীকার করবে?"(
فَبِاَیِّ اٰلَآءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبٰنِ ﴿١٣﴾
উচ্চারণঃ ফাবিআইয়ি আ-লাই রাব্বিকুমা-তুকাযযিবা-ন।)
আল্লাহ্ পাক আমার মা-বাবার কোল জুড়ে ৯ টি সন্তান দান করলেও তঁদের প্রথম সন্তান (ডাক নাম ছিলো 'মোস্তফা') দুনিয়ার আলো দেখার কিছু দিন পর,আল্লাহ্ রাব্বুল আ'লামিন তাঁর নিজ জিম্মায় নিয়ে গেছেন। তারপর আল্লাহ্ পাক তাঁদেরকে আরেক ছেলে-সন্তান দান করলেন। তার বছর দেড়েকএক পর ১৯৭৭ সালের ২০শে অক্টোবর আমাকে দুনিয়াতে পাঠালেন। সেই সূত্রে বর্তমানে ভাই-বোনদের মধ্যে আমি দ্বিতীয় সন্তান মা-বাবার।
১৯৭৭ সালে জন্ম নেওয়া আল্লাহর এই না-ফরমান বান্দাকে আল্লাহ্ পাক এতই নিয়ামতরাজি দান করেছেন,কেমনে সে-ই নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করি...! আমার বাবা ছিলেন যুগশ্রেষ্ঠ আলেম হযরত মাওলানা ছিদ্দিকুর রহমান। আমি ছিলাম তাঁর সন্তানদের মধ্যে তাঁর সবচাইতে প্রিয়-বিশ্বস্ত বন্ধু।তিনি চেয়েছিলেন,আমি যেন তাঁর পথ ধরে আলেম হই বাট খটকা বাজে পরে। যখন বাবা আমাকে ক্বোরআন পড়াতেন তখন এতো অধিক সংখ্যকবার আমাকে পড়া বলেদিতেন বাট সেই পড়াগুলো কেন জানি আমার মুখস্থ হইতোনা,তার চে' বরং এ সময়ে ইংরেজী যে কোন বই আমার কাছে খুবই তাড়াতাড়ি মুখস্ত হয়ে যেতো। বাবা আমাকে সব ধরনের চেষ্টা করেছেন,মাদ্রাসায় পড়াতে বাট কেন জানি,আমি মাদ্রাসায় পড়তে ভালো লাগতোনা বা পড়া মুখস্থ হতো না। অবশেষে বাবা বাধ্য হয়ে আমাকে স্কুলে প্রাইমারিতে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করে দিলেন এবং বললেন,"তোমার মাদ্রাসায় পড়া লাগবেনা,আলেম হওয়ারও দরকার নাই। তুমি স্কুলে পড় আর শোন,স্কুল পড়লেও তুমি আলেম হতে পারবে বা আলেম হয়ে যে সওয়াব পাবার কথা পাবে,যদি তুমি তিনটি কাজ করো।"(১) সর্বদা-ই আল্লাহর উপর ভরসা করে তাঁর প্রদত্ত দায়িত্ব পালন করবে।(২)যে ব যা কাজ করবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সঠিক কাজটি করবে।(৩)মানুষ ও মানবতার কল্যাণে,কল্যাণময় সঠিক কাজটি করবে এবং সওয়াবের উদ্দ্যেশে করবে এবং আলেমদের সাথে সু-সম্পর্ক রাখবে।"বাবার সে-ই আদর্শ বাণী আজো বুকে ধারণ করে ভালো ও কল্যাণময় কাজটি করার চেষ্টা করি।
প্রাইমারীতে প্রথম শ্রেণিতে(হাইল ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়) ভর্তির পর সাফল্যের সহিত প্রাইমারী জীবন শেষ করে ১৯৮৬ সালে জকিগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হই।উল্লেখ্য যে ছাত্র হিসেবে সর্বদা-ই ক্লাসে ''রোল নম্বর-১" ছিলো।অনেক সময়ে ষঢ়যন্ত্রের শিকার হলে একটু ব্যতিক্রম যে হয়নি তা কিন্তু নয়!তবে ছাত্র হিসেবে খুবই তুখোড় ছিলাম তাতে কোন সন্দেহ ছিলোনা।বেশ কয়েকটি ক্লাসে বৃত্তি পেয়েছিও।সাফল্যের সাথে ষ্টার মার্ক পেয়ে ১৯৯৩ সালে সিলেটের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ এম.সি.বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। এরই মধ্যে শ্রদ্ধেয় পিতা অসুস্থ হয়ে পড়লে জীবনে কষ্টের গ্যাঁড়াকলে পড়ে যাই। বহু তোড়াই উতরাই পার করে আল্লাহ্ পাক আমাকে চিকিৎসক হিসেবে কবুল করেন।অবশেষে ২০০৬ সাল থেকে অদ্যাবধি চিকিৎসা পেশায় চাকরীরত আছি। চেষ্টা করি,বাবার সেই অমৃত বাণী বুকে ধারন করে সঠিক জিন্দেগী পার করতে। আল্লাহ্ পাক আমাকে তাঁর ও তাঁর হাবিব,প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর দেখানো পথে (যদিও_এ_পথ_অত্যন্ত_কঠিন) চলার তৌফিক দান করুক। সাথে আল্লাহর কাছে নেক হায়াত ও সুস্থ্য জীবন কামনা করছি।
<p>সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি:মোস্তাক আহমেদ, সম্পাদক:আতিকুল ইসলাম সোহাগ, নির্বাহী সম্পাদক: উমর ফারুক শাবুল, বার্তা সম্পাদক:মোঃ শরিফ উদ্দিন, সম্পাদক (+8801711-462641), নির্বাহী সম্পাদক (+8801727241310), বার্তা সম্পাদক(+8801750025347)<br><br></p>
© All rights reserved 2022 habiganjerkantho.com