আধ‍্যাত্মিক সাধনার ন‍্যায় সাহিত্য সাধনাও জগতে এক কঠিন এবং মহান সাধনা।আধ‍্যাত্মিক সাধনায় ব‍্যক্তি পরকালে নিজের মুক্তিলাভের আশায় স্রষ্টার সন্নিকট লাভে সচেষ্ট হয়,কিন্তু সাহিত্য সাধনায় ব‍্যক্তি অন‍্যের হিতে,সমাজের জন্য,মানুষের জন‍্য,জীবের জন‍্য এমনকি নির্জিব জড় বস্তুর জন‍্য সাধনা চালিয়ে থাকেন। পরের জন‍্য,মানুষকে জাগিয়ে তুলতে কবি সাহিত্যকগণ কলম ধরেন। পরের তরে লিখতে গিয়ে নিজেরা অপদস্ত,সমালোচিত এমনকি জীবনে কঠিন পরিস্থিতিরও মোকাবেলা করতে হয় কবি সাহিত্যিকদের।কবি সাহিত্যিক সমাজের দূরবীন স্বরূপ।ভবিষ‍্যত দেখার চোখ রয়েছে তাদের। সমাজের অনুবীক্ষণ বললেও অত‍্যুক্তি হবেনা।অনুবীক্ষণ যন্ত্র যেভাবে সাধারণ মানুষের চোখে যা দেখেনা তা দেখিয়ে দেয়,কবি সাহিত‍্যিকরাও সমাজ যা সহজে দেখেনা,বুঝেনা তা দেখে এবং বুঝে। মানুষকে বুঝানোর জন‍্য কলম ধরে যান তারা। এক কথায় কবি সাহিত‍্যিকদের সমাজের তৃতীয় নেত্র বলা চলে। ধর্ম,বর্ণ, জাতি, ভাষা আদির উর্ধ্বে গিয়ে মানুষের এক পৃথিবী গড়তে চান কবিরা,সাহিত‍্যিকরা।জগতকে একমাত্র একটা পরিবার হিসাবে দেখেন তারা। মানুষকে মানুষের জন‍্য মানুষের এক নতুন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখেন তারা।
বর্তমান যুগে উদারমনা ব‍্যক্তিত্ব ব‍্যতীত সাহিত্য সাধনা অসম্ভবপ্রায়। রেষারেষি এবং হিংসা বিদ্বেষের বিশ্বে এক ভালোবাসার নতুন বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে কলমধরেরা কলম ধরেন। তাদের নেই কোনো ভৌগোলিক সীমা,নেই কোন ধর্ম বিদ্বেষ,নেই জাতপাতের বলয়। সবাইকে আপন করে নিতে চান তারা। পরের তরে নিজের সর্বস্ব ত‍্যাগ করে পারেন কবি সাহিত্যিক নামের পাগলরা।
কবি শাহ কামাল আহমদ উদারমনা এবং বিরল প্রতিভার এক নবীন কবি। বাংলাদেশ থেকে সুদূর যুক্তরাজ‍্যে বসবাস করে কর্মজীবনের ভীষণ ব‍্যস্ততার মাঝেও যে সাহিত্য সাধনা চালিয়ে যাচ্ছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়।বাংলা সাহিত্য পরিষদ ইউকে গঠন করে বাংলা ভাষার কবি সাহিত্যিকদের যুক্ত করে নিয়মিত কাব‍্যচর্চা করে যাচ্ছেন তা প্রবাসজীবনের এক দুঃসাহসিক কাজ বলা যায়।
গত ৭ অক্টোবর ২০২৩ দেশ বিদেশের কবি সাহিত‍্যিকদের জড়ো করে নিজের কষ্টার্জিত লক্ষাধিক টাকা ব‍্যয়ে সিলেটের জেলা পরিষদ মিলনায়তনে যে এক বর্নাট‍্য আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান উপহার দিয়েছেন তা সিলেটের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কবি শাহ কামাল যে সত‍্যিকারের একজন সাহিত্যপ্রিয় তা তার কাব‍্যসাধনা এবং কবি সাহিত‍্যিকদের প্রতি অগাধ ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা প্রদর্শন থেকে উপলব্দি করা যায়। প্রবাসজীবনের যাতাকলে পিষ্টিত হয়েও বাংলাদেশের জন‍্য, বাংলা ভাষার জন‍্য ” হৃদয়ে বাংলাদেশ ” কাব‍্যগ্রন্থ সম্পাদনা করে দেশাত্মবোধের প্রমাণ দিয়েছেন।
আজ থেকে পাঁচমাস আগে যিনি নিজের পকেটের বিরাট অংকের টাকা খরছ করে সাহিত্য অনুষ্ঠান করেছেন, সেই উদ‍্যমী নবীন কবি শাহ কামাল আহমদ ফের আগামী মাসে অর্থাৎ ভাষার মাসে আবারও এক আন্তর্জাতিক সাহিত্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছেন তা সত্যিই মহান মনের পরিচায়ক। প্রকৃত সাহিত্যপ্রিয় ব‍্যতীত তা কখনও সম্ভব নয়। শহরের পাশাপাশি মফস্বল বা গ্রাম‍্য পরিবেশেও কাব‍্য সাধনার বাতাস বইয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে গ্রামস্তরেও অনুষ্ঠান করছেন তিনি। অনলাইন সাহিত্য জগতে তথা নতুন এবং পরবর্তী প্রজন্মের কাছে শাহ কামাল আহমদ এক প্রেরণার নাম হিসাবে অমর থাকবে।

সাহিত্য সাধনায় কবি শাহ কামাল আহমদ :
কমর উদ্দিন লস্কর,
মণিপুর রাজ‍্য,ভারত।